ঈদের খুৎবা নামাযের পর হয়, জুমার খুৎবা নামাযের পূর্বে কেন?

১. মহান আল্লাহ তা‘আলা যে কোন বিধান নিয়ে কারো নিকট জিজ্ঞাসিত নয়।

যেমন কুরআন কারীমে বলা হয়েছে-

لَا يُسْأَلُ عَمَّا يَفْعَلُ وَهُمْ يُسْأَلُونَ  -الأنبياء:٢٣

অর্থাৎ : মহান আল্লাহ তাঁর কৃতকর্ম সম্পর্কে কারো কাছে জিজ্ঞাসিত নন, বরং সকলেই তাঁর কাছে জিজ্ঞাসিত।( সূরা আম্বিয়া-২৩)।

তাই এই সব বিষয়ে প্রশ্ন না করাই উত্তম।

২. প্রকৃত পক্ষে ঈদ ও জুমুআ দুটির খুৎবাই নামাযের পরে ছিল। কিন্তু কিছু সমস্যার কারণে জুমুআর খুৎবাকে নামাযের পূর্বে আনা হয়েছে। তা নিন্মে উল্লেখ করা হলো-

المراسيل لأبي داود (١ / ١٠٥):

٦٢ – حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ خَالِدٍ، حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ، أَخْبَرَنِي أَبُو مُعَاذٍ بُكَيْرُ بْنُ مَعْرُوفٍ أَنَّهُ سَمِعَ مُقَاتِلَ بْنَ حَيَّانَ، قَالَ: ” كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّي الْجُمُعَةَ قَبْلَ الْخُطْبَةِ مِثْلَ الْعِيدَيْنِ حَتَّى كَانَ يَوْمُ جُمُعَةٍ وَالنَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَخْطُبُ وَقَدْ صَلَّى الْجُمُعَةَ، فَدَخَلَ رَجُلٌ فَقَالَ: إِنَّ دِحْيَةَ بْنَ خَلِيفَةَ قَدِمَ بِتَجَارَتِهِ، وَكَانَ دِحْيَةُ إِذَا قَدِمَ تَلَقَّاهُ أَهْلُهُ بِالدِّفَافِ، فَخَرَجَ النَّاسُ فَلَمْ يَظُنُّوا إِلَّا أَنَّهُ لَيْسَ فِي تَرَكِ الْخُطْبَةِ شَيْءٌ؛ فَأَنْزَلَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ {وَإِذَا رَأَوْا تِجَارَةً أَوْ لَهْوًا انْفَضُّوا إِلَيْهَا} [الجمعة: ١١] ، فَقَدِمَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْخُطْبَةَ يَوْمَ الْجُمُعَةِ وَأَخَّرَ الصَّلَاةَ …….. الخ

অর্থাৎ : হযরত মুকাতেল ইবনে হাইয়ান (রহ.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঈদের নামাযের ন্যায় খুৎবার পূর্বেই জুমুআর নামায আদায় করতেন। একদা রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জুমুআর নামায শেষে খুৎবা দিচ্ছিলেন। অতঃপর এক ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করে বললো: দি‘হইয়া ইবনে খলিফা ব্যবসায়ী সরাঞ্জাম নিয়ে আগমন করেছে, (আর দি‘হইয়া যখন আগমন করতো, সকলে তাকে বাদ্যযন্ত্রবিশেষ দ্বারা স্বাগতম জানাতো।) অতঃপর সকলেই খুৎবা শুনা আবশ্যক নয় ভেবে (মসজিদ থেকে) বের হয়ে গেলো।

এই মর্মে মহান আল্লাহ তা‘আলা পবিত্র কুরআনে বলেন-

তারা যখন কোন ব্যবসায়ের সুযোগ অথবা ক্রিড়া-কৌতুক দেখে তখন সেদিকে ছুটে যায় (সূরা জুমা-১১)

অতঃপর রসূল (সল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পরবর্তী জুমুআয়, খুৎবাকে নামাযের পূর্বে নিয়ে আসেন। আর নামায খুৎবাহ এর পরে আদায় করেন….. (আল মারাসিল লি-আবি-দাঊদ-১০৫, হাদীস-৬২)

উক্ত হাদীসটি মুরসালে সহীহ-

জ্ঞাতব্য : মুরসাল হাদীস য‘ঈফ হাদীস এর একটি প্রকার।

উল্লেখ্য যে, য‘ঈফ হাদীস (আমলযোগ্য)। উলূমে হাদীসের নিয়ম অনুসারে দুটি ক্ষেত্র ব্যতীত অন্যত্র য‘ঈফ হাদীস এর উপর আমল করা যাবে-

تيسير مصطلح الحديث (ص: ٨٠)

يجوز عند أهل الحديث وغيرهم رواية الأحاديث الضعيفة، والتساهل في أسانيدها من غير بيان ضعفها -بخلاف الأحاديث الموضوعة فإنه لا يجوز روايتها إلا مع بيان وضعها- بشرطين، هما:

أ- ألا تتعلق بالعقائد، كصفات الله تعالى.

ب- ألا يكون في بيان الأحكام الشرعية مما يتعلق بالحلال والحرام.

আক্বিদা সম্বলিত যেমন আল্লাহর গুনাগুন ও হালাল-হারাম ব্যতীত অন্য স্থানে য‘ঈফ হাদীস এর উপর আমল করা যাবে। (তাইসীরু মুসতালাহীল হাদীস-৮০)।

তাই এ ক্ষেত্রেও হাদীসটি প্রমাণযোগ্য হতে কোন বাধা নেই।

اللهم ارزقني حب الكتاب والسنة وحب من يحبهما . آمين .

মুফতী মো. ছানা উল্লাহ

প্রধান মুফতী ও গবেষক- মারকাযুল ইসলাহ, বাংলাদেশ।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
সব বিভাগ