মসজিদে ক্বুবা’র সংক্ষিপ্ত ইতিহাস!
মহানবী হযরত মু‘হাম্মাদ (সল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নবুওয়াত লাভের পর মক্কায় ইসলাম ধর্ম প্রচার শুরু করেন। ইসলাম প্রচারের কারণে কুরাইশরা মহানবী (সল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তাঁর সাহাবা (রদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহুম আজমা‘য়ীন)-এর উপর নির্মম অত্যাচার ও নির্যাতন চালায়। নির্যাতনের পরও মহানবী (সল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দ্বীনের দা’ওয়াত চালিয়ে যেতে থাকলে কুরাইশরা এক পর্যায়ে মহানবী (সল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে হত্যা করার পরিকল্পনা গ্রহন করে। এমতাবস্থায় আল্লাহর আদেশক্রমে মহানবী (সল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হযরত আবু বাকার (রদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু)- কে সাথে নিয়ে ইসলামের শক্রদের চোখ ফাঁকি দিয়ে ৬২২ খষ্টাব্দের ২২ শে সেপ্টেম্বর মাতৃভূমি মক্কা ত্যাগ করে মদীনায় হিজরত করেন।
মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মক্কা থেকে হিজরত করে মদীনায় আসছেন এই সংবাদ পেয়ে মদীনাবাসী আনন্দে আত্মহারা হয়ে উঠেন। প্রতিদিন দলে দলে আবাল-বৃদ্ধ-বনীতা মদীনা থেকে তিন মাইল দূরে অবস্থিত ক্বুবা পল্লীর হার্রা নামক স্থানে জড়ো হতে লাগলেন এবং তাঁর জন্য অপেক্ষা করতে থাকলেন। কিন্তু তাঁকে না দেখে সবাই হতাশ হয়ে ফিরে যেতেন। একদিন এক ইহুদী দূর্গ প্রাচীরে উঠে বহু দূরে ধূলি উড়তে দেখে চিৎকার করে মদীনাবাসীকে রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আগমনের সু-সংবাদ জানায়। সাথে সাথে মদীনাবাসী আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে উঠে এবং মহানবী (সল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সাদরে বরণ করে নেন।
মদীনায় হিজরত করে নবী কারীম (সল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সর্বপ্রথম ‘আমর ইবনে ‘আওফের গোত্রপতি কুলসুম ইবনুল হিদমের আতিথিয়তা গ্রহন করেন। মহানবী (সল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এখানে ১৪ দিন অবস্থান করেন। এখানে অবস্থানকালে তিনি কুলসুম ইবনুল হিদম (রদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহা)-এর খেজুর শুকানোর পতিত জমিতে মসজিদে ক্বুবা নির্মান করেন । মসজিদে ক্বুবা উম্মতে মু‘হাম্মাদীর (সল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সর্বপ্রথম মসজিদ। মসজিদে ‘হারাম, মসজিদে নববী এবং মসসিদে আক্বসার পরই মসজিদে ক্বুবার সম্মান। পবিত্র কুরআনের সুরা তাওবার ১০৮ নং আয়াতে এই মসজিদের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। মহান আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন-
“যে মসজিদ প্রথম দিন থেকেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তাক্বওয়ার উপর (মসজিদে ক্বুবা) -তাই বেশী হকদার যে, তুমি সেখানে সালাত কায়েম করতে দাঁড়াবে। সেখানে এমন লোক আছে, যারা উত্তমরূপে পবিত্রতা অর্জন করতে ভালবাসে। আর আল্লাহ্ পবিত্রতা অর্জনকারীদের ভালবাসেন।” (সূরা তাওবা, আয়াত ১০৮)
“মসজিদে ক্বুবায় এক ওয়াক্ত নামায আদায় করা সওয়াবের দিক থেকে একটি উমরার সমতুল্য।” (তিরমিযী)