বর্তমান প্রেক্ষাপটে ফিকহি মাসায়িল নিয়ে আলোচনা করা উচিত কি?

(ইবনে যাকির)

দ্বীনের অন্যতম একটা মূলনীতি হচ্ছে— ‘ফুরুর (শাখা) তুলনায় উসুলকে (মূল) প্রাধান্য দেয়া।’

আর দ্বীনের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো বিশুদ্ধ ইমান-আকিদাহ। তাই আমরা ঈমান-আকিদাহকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে থাকি। এরপর শরিয়াহর অবস্থানের আলোকে অন্যান্য বিষয়াবলি যথাক্রমে গুরুত্ব পায়। সহজে বললে, আগে আকিদাহ, পরে ফিকহ।

এ জন্য আমাদের আলিমগণের পন্থা হচ্ছে, নানামুখী সমস্যায় জর্জরিত উম্মাহকে ফিকহের খুঁটিনাটি মাসআলায় না জড়িয়ে তাওহিদ, শিরক, কুফর, তাগুত, ওয়ালা বারায়া ইত্যাদি সম্পর্কে সচেতন করা।

কিন্তু এখানেও মনে রাখা দরকার যে, ফিকহ মুমিন-জীবনের অপরিহার্য এক অনুষঙ্গ। মানবজীবনের সাথে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত ফিকহি মাসায়িল। স্বভাবতই মানুষ যার থেকে ফিকহ গ্রহণ করে, তার থেকেই আকিদাহ গ্রহণ করে। তাই যারা উম্মাহর আকিদাহ ইসলাহের ফিকির করবেন, প্রয়োজনানুপাতে তারা ফিকহেরও চর্চা করবেন।

কেননা মানুষ সর্বদাই একটা ‘ফুল প্যাকেজ’ চায়। যার থেকে ফিকহ নেয়, তার থেকেই আকিদাহ নেয়।

ইদানীং ফিকহি কোনো মাসআলা নিয়ে আলোচনা এলেই একদল ভাই বলে উঠেন, ‘আরে ভাই, রাখেন তো এসব। এখন এসবের সময় নয়। মৌলিক বিষয়ে কথা বলুন!’

হ্যাঁ, ভাই! মৌলিক বিষয় তো সব সময়ই গুরুত্বের দাবি রাখে। কিন্তু আপনার কাছ থেকে মানুষ মৌলিক বিষয়গুলো তখনই গ্রহণ করবে, যখন জীবনের অপরাপর বিষয়গুলোর সমাধানও আপনার কাছ থেকে পাবে।

তাকান ইমামু আহলিস সুন্নাহ আহমাদ ইবনু হাম্বালের দিকে। তাকান ইবনু তাইমিয়াহর দিকে (রাহিমাহুমাল্লাহ)। তারা কি আমাদের শুধু আকিদাহই দিয়ে গেছেন? মুদাল্লাল (দলিল ভিত্তিক) ফিকহের বিশাল ভান্ডার দিয়ে যান নি? তাকান শাইখ আবদুল্লাহ আযযাম রাহিমাহুল্লাহ’র দিকে। একদিকে তিনি যেমন العقيدة وأثرها في بناء الجيل (শাইখের আকিদাহ সংক্রান্ত একটি প্রামাণ্য কিতাব) লিখেছেন, উম্মাহকে সজাগ করেছেন; তেমনি তিনি লিখেছেন كتاب الصلاة (সালাত সংক্রান্ত একটি ফিকহি কিতাব)। এখনও এ ধারাই অব্যাহত আছে। উম্মাহর সচেতন আলিমগণ আকায়িদের পাশাপাশি মাসায়িলও চর্চা করছেন।

তবে কখনই তারা ফিকহি মাসায়িলে মশগুল (ব্যস্ত) হয়ে যাচ্ছেন না। তাদের তীক্ষ্ণ দৃষ্টি সর্বদা প্রহরা দিচ্ছে উম্মাহর মৌলিক বিষয়াবলি।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
সব বিভাগ