আল-বাকারা ১০৬-১১৯

۞مَا نَنسَخۡ مِنۡ ءَايَةٍ أَوۡ نُنسِهَا نَأۡتِ بِخَيۡرٖ مِّنۡهَآ أَوۡ مِثۡلِهَآۗ أَلَمۡ تَعۡلَمۡ أَنَّ ٱللَّهَ عَلَىٰ كُلِّ شَيۡءٖ قَدِيرٌ ١٠٦

১০৬.আমি কোন আয়াত রহিত করলে অথবা বিস্মৃত করিয়ে দিলে তদপেক্ষা উত্তম অথবা তার সমপর্যায়ের আয়াত আনয়ন করি। তুমি কি জান না যে, আল্লাহ্‌ সব কিছুর উপর শক্তিমান?

أَلَمۡ تَعۡلَمۡ أَنَّ ٱللَّهَ لَهُۥ مُلۡكُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِۗ وَمَا لَكُم مِّن دُونِ ٱللَّهِ مِن وَلِيّٖ وَلَا نَصِيرٍ ١٠٧

১০৭.তুমি কি জান না যে, আল্লাহ্‌র জন্যই নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের আধিপত্য? আল্লাহ্‌ ব্যতীত তোমাদের কোন বন্ধু ও সাহায্যকারী নেই।

أَمۡ تُرِيدُونَ أَن تَسۡ‍َٔلُواْ رَسُولَكُمۡ كَمَا سُئِلَ مُوسَىٰ مِن قَبۡلُۗ وَمَن يَتَبَدَّلِ ٱلۡكُفۡرَ بِٱلۡإِيمَٰنِ فَقَدۡ ضَلَّ سَوَآءَ ٱلسَّبِيلِ ١٠٨

১০৮.ইতিপূর্বে মূসা (‘আলাইহিচ্ছালাম) যেমন জিজ্ঞাসিত হয়েছিলেন, (মুসলমানগন, ) তোমরাও কি তোমাদের রসূলকে তেমনি প্রশ্ন করতে চাও? যে কেউ ঈমানের পরিবর্তে কুফর গ্রহন করে, সে সরল পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে যায়।

وَدَّ كَثِيرٞ مِّنۡ أَهۡلِ ٱلۡكِتَٰبِ لَوۡ يَرُدُّونَكُم مِّنۢ بَعۡدِ إِيمَٰنِكُمۡ كُفَّارًا حَسَدٗا مِّنۡ عِندِ أَنفُسِهِم مِّنۢ بَعۡدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُمُ ٱلۡحَقُّۖ فَٱعۡفُواْ وَٱصۡفَحُواْ حَتَّىٰ يَأۡتِيَ ٱللَّهُ بِأَمۡرِهِۦٓۗ إِنَّ ٱللَّهَ عَلَىٰ كُلِّ شَيۡءٖ قَدِيرٞ ١٠٩

১০৯.আহলে কিতাবদের অনেকেই প্রতিহিংসাবশতঃ চায় যে, মুসলমান হওয়ার পর তোমাদেরকে কোন রকমে কাফের বানিয়ে দেয়। তাদের কাছে সত্য প্রকাশিত হওয়ার পর (তারা এটা চায়)। যাক তোমরা আল্লাহ্‌র নির্দেশ আসা পর্যন্ত তাদের ক্ষমা কর এবং উপেক্ষা কর। নিশ্চয় আল্লাহ্‌ সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান।

وَأَقِيمُواْ ٱلصَّلَوٰةَ وَءَاتُواْ ٱلزَّكَوٰةَۚ وَمَا تُقَدِّمُواْ لِأَنفُسِكُم مِّنۡ خَيۡرٖ تَجِدُوهُ عِندَ ٱللَّهِۗ إِنَّ ٱللَّهَ بِمَا تَعۡمَلُونَ بَصِيرٞ ١١٠

১১০.তোমরা নামায প্রতিষ্ঠা কর এবং যাকাত দাও। তোমরা নিজের জন্যে পূর্বে যে সৎকর্ম প্রেরণ করবে, তা আল্লাহ্‌র কাছে পাবে। তোমরা যা কিছু কর, নিশ্চয় আল্লাহ্‌ তা প্রত্যক্ষ করেন।

وَقَالُواْ لَن يَدۡخُلَ ٱلۡجَنَّةَ إِلَّا مَن كَانَ هُودًا أَوۡ نَصَٰرَىٰۗ تِلۡكَ أَمَانِيُّهُمۡۗ قُلۡ هَاتُواْ بُرۡهَٰنَكُمۡ إِن كُنتُمۡ صَٰدِقِينَ ١١١

১১১.ওরা বলে, ইহুদী অথবা খ্রীস্টান ব্যতীত কেউ জান্নাতে যাবে না। এটা ওদের মনের বাসনা। বলে দিন, তোমরা সত্যবাদী হলে, প্রমাণ উপস্থিত কর।

بَلَىٰۚ مَنۡ أَسۡلَمَ وَجۡهَهُۥ لِلَّهِ وَهُوَ مُحۡسِنٞ فَلَهُۥٓ أَجۡرُهُۥ عِندَ رَبِّهِۦ وَلَا خَوۡفٌ عَلَيۡهِمۡ وَلَا هُمۡ يَحۡزَنُونَ ١١٢

১১২.হাঁ, যে ব্যক্তি নিজেকে আল্লাহ্‌র উদ্দেশ্যে সমর্পন করেছে এবং সে সৎকর্মশীলও বটে তার জন্য তার পালনকর্তার কাছে পুরস্কার বয়েছে। তাদের ভয় নেই এবং তারা চিন্তিতও হবে না।

আনুষঙ্গিক জ্ঞাতব্য বিষয়ঃ

مَا نَنسَخۡ مِنۡ ءَايَةٍ أَوۡ نُنسِهَا এই আয়াতে কুরআনী আয়াত রহিত হওয়ার সম্ভাব্য সকল প্রকারই সন্নিবেশিত রয়েছে। অভিধানে ‘নাস্‌খ’ শব্দের অর্থ দূর করা, লিখা। সমস্ত মুসলিম টীকাকার এ বিষয়ে একমত যে, আয়াতে ‘নাস্‌খ’ শব্দ দ্বারা বিধি-বিধান দূর করা- অর্থাৎ, রহিত করাকে বোঝানো হয়েছে। এ কারণেই ‘হাদীস ও কুরআনের পরিভাষায় এক বিধানের স্থলে অন্য বিধান প্রবর্তন করাকে ‘নাস্‌খ’ বলা হয়। ‘অন্য বিধানটি’ কোন বিধানের বিলুপ্তি ঘোষণাও হতে পারে, আবার এক বিধানের পরিবর্তে অপর বিধান প্রবর্তনও হতে পারে।

আল্লাহ্‌র বিধানে নাস্‌খের স্বরুপঃ জগতের রাষ্ট্র ও আইন-আদালতে এক নির্দেশকে রহিত করে অন্য নির্দেশ জারী করার ব্যাপারটি সর্বজনবিদিত। রচিত আইনে ‘নাস্‌খ’ বিভিন্ন কারণে হয়ে থাকে।

(১) ভূল ধারণার উপর নির্ভর করে প্রথমে যদি কোন আইন প্রবর্তন করা হয়, তবে পরে বিষয়টির প্রকৃত স্বরূপ উদঘাটিত হলে পূর্বেকার আইন পরিবর্তন করা হয়।

(২) ভবিষ্যত অবস্থার গতি-প্রকৃতি জানা না থাকার কারণে কোন কোন সাময়িক আইন জারী করা হয়। পরে অবস্থার পরিবর্তনের সাথে সাথে সে আইনও পরিবর্তন করা হয়। কিন্তু এ ধরনের নাস্‌খ আল্লাহ্‌র আইনে হতে পারে বলে ধারণা করা যায় না।

তৃতীয় প্রকার ‘নাস্‌খ’ এরূপঃ আইন-রচয়িতা আগেই জানে যে, অবস্থার পরিবর্তন হবে এবং তখন এই আইন আর উপযোগী থাকবে না, অন্য আইন জারী করতে হবে। এরুপ জানার পর সাময়িকভাবে এই আইন জারী করে দেন, পরে পূর্বজ্ঞান অনুযায়ী যখন অবস্থার পরিবর্তন ঘটে, তথন পূর্বসিদ্ধান্ত অনুযায়ী আইন পরিবর্তন করেন।

উদাহরণতঃ রোগীর বর্তমান অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে চিকিৎসক ব্যবস্থাপত্র দেন। তিনি জানেন যে, এই ওষুধ দু’দিন সেবন করার পর রোগীর অবস্থার পরিবর্তন হবে এবং তখন অন্য ব্যবস্থাপত্র দিতে হবে। অবস্থার এহেন পরিবর্তন জানার ফলেই চিকিৎসক প্রথম দিন এক ওষুধ এবং পরে অন্য ওষুধ দেন।

অভিজ্ঞ চিকিৎসক প্রথম দিনেই চিকিৎসার পূর্ণ প্রোগ্রাম কাগজে লিখে দিতে পারে যে, দুদিন এই ওষুধ, তিন দিন অন্য ওষুধ এবং এক সপ্তাহ পর অমুক ওষুধ সেব্য। কিন্তু এরূপ করা হলে রোগীর পক্ষে জটিলতার সম্মুখীন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে এবং এতে ভূল বুঝাবুঝির-

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
সব বিভাগ