আল-বাকারা ১-১৫

سُورَةُ البَقَرَةِ

২-সূরা আল-বাক্বারা

(মদীনায় অবতীর্ণঃ আয়াত ২৮৬)

পৃষ্ঠা নং-১১

بِسۡمِ ٱللَّهِ ٱلرَّحۡمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ

পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহ্‌র নামে শুরু করছি।

الٓمٓ ١

১.আলিফ লা-ম মীম।

 ذَٰلِكَ ٱلۡكِتَٰبُ لَا رَيۡبَۛ فِيهِۛ هُدٗى لِّلۡمُتَّقِينَ ٢

২.এ সেই কিতাব যাতে কোনই সন্দেহ নেই। পথ প্রদর্শনকারী পরহেযগারদের জন্য,

ٱلَّذِينَ يُؤۡمِنُونَ بِٱلۡغَيۡبِ وَيُقِيمُونَ ٱلصَّلَوٰةَ وَمِمَّا رَزَقۡنَٰهُمۡ يُنفِقُونَ ٣

৩.যারা অদেখা বিষয়ের উপর বিশ্বাস স্থাপন করে এবং নামায প্রতিষ্ঠা করে। আর আমি তাদেরকে যে রুযী দান করেছি তা থেকে ব্যয় করে।

وَٱلَّذِينَ يُؤۡمِنُونَ بِمَآ أُنزِلَ إِلَيۡكَ وَمَآ أُنزِلَ مِن قَبۡلِكَ وَبِٱلۡأٓخِرَةِ هُمۡ يُوقِنُونَ ٤

৪.এবং যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে সেসব বিষয়ের উপর যা কিছু তোমার প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে এবং সেসব বিষয়ের উপর যা তোমার পূর্ববর্তীদের প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে। আর আখিরাতকে (পরকাল) যারা নিশ্চিত বলে বিশ্বাস করে।

সূরা বাক্বরার ফযীলতঃ

এ সূরা বহু আ’হকাম সম্বলিত সবচাইতে বড় সূরা। নবী কারীম (সল্লাল্ল-হু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ইরশাদ করেছেন যে, সূরা বাক্বরহ পাঠ কর। কেননা, এর পাঠে বরকত লাভ হয় এবং পাঠ না করা অনুতাপ ও দুর্ভাগ্যের কারণ। যে ব্যক্তি এ সূরা পাঠ করে তার উপর কোন আহ্‌লে-বাতিল তথা জাদুকরের জাদু কখনো প্রভাব বিস্তার করতে পারে না।

নবী কারীম (সল্লাল্ল-হু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এ সূরাকে سنام القران (সিনা-মুল্ ক্বুরআ-ন) ও ذروة القران (যারওয়াতুল্ ক্বুরআ-ন) বলে উল্লেখ করেছেন। সিনা-ম ও যারওয়াহ বস্তুর উৎকৃষ্টতম অংশকে বলা হয়। সূরা বাক্বরায় আয়াতুল কুরসী নামে যে আয়াতখানা রয়েছে তা ক্বুরআন শরীফের অন্যান্য সকল আয়াত থেকে উত্তম। [ইব্‌ন কাছীর]

হযরত ইব্‌ন মাস‘ঊদ (রদ্বিয়াল্লহু ‘আনহু) বলেছেন যে, এ সূরায় এমন দশটি আয়াত রয়েছে, কোন ব্যক্তি যদি সে আয়াতগুলো রাতে নিয়মিত পাঠ করে, তবে শয়তান সে ঘরে প্রবেশ করতে পারবেনা এবং সে রাতের মত সকল বলা-মুসীবত, রোগ-শোক ও দুশ্চিন্তা ও দুর্ভাবনা থেকে নিরাপদে থাকবে। তিনি আরো বলেছেন, যদি বিকৃতমস্তিস্ক লোকের উপর এ দশটি আয়াত পাঠ করে দম করা হয়, তবে সে ব্যক্তি সুস্থতা লাভ করবে। আয়াত দশটি হচ্ছেঃ সূরার প্রথম চার আয়াত, মধ্যের তিনটি অর্থাৎ, আয়াতুল কুরসী ও তার পরের দু’টি আয়াত এবং শেষের তিনটি আয়াত।

আ‘হকাম ও মাসায়েলঃ বিষয়বস্তু ও মাসায়েলের দিক দিয়েও সূরা বাক্বরহ্ সমগ্র কুরআনের অনন্য বৈশিষ্ট্য ও মর্যাদার অধিকারী। এ সূরায় এক হাজার আদেশ, এক হাজার নিষেধ, এক হাজার ‘হিকমত এবং এক হাজার সংবাদ ও কাহিনী রয়েছে।

আনুসঙ্গিক জ্ঞাতব্য বিষয়ঃ

‘হুরূফে মুক্বত্ত্ব‘আ-তঃ অনেকগুলো সূরার প্রারম্ভে কতকগুলো বিচ্ছিন্ন বর্ণ দ্বারা গঠিত এক-একটা বাক্য উল্লেখিত হয়েছে। যথা الٓمٓصٓ ـ حمٓ ـ الٓمٓ এগুলোকে কুরআনের পরিভাষায় ‘হুরূফে মুক্বত্ত্ব‘আ-ত’ বলা হয়। এ অক্ষরগুলোর প্রত্যেকটিকে পৃথক পৃথকভাবে সাকিন পড়া হয়। যথা مِيْمْ ـ لاَمْ ـ الف (আলিফ-লা-ম্-মীম)।

কোন কোন তাফসীরকার এ ‘হরফগুলোকে সংশ্লিষ্ট সূরার নাম বলে অভিহিত করেছেন। আবার কেউ কেউ বলেছেন যে, এগুলো আল্লাহ্‌র নামের তত্ত্ব বিশেষ।

অধিকাংশ সা‘হাবী, তাবে‘য়ী এবং ‘উলামাদের মধ্যে সর্বাধিক প্রচলিত মত হচ্ছে যে, ‘হুরূফে মুক্বত্ত্ব‘আ-তগুলো এমনি রহস্যপূর্ণ যার মর্ম ও মাহাত্ম্য একমাত্র আল্লাহ্ তা‘আলাই জানেন। অন্য কাকেও এ বিষয়ে জ্ঞান দান করা হয়নি।

এ প্রসঙ্গে ইমাম কুরতুবী লিখেছেনঃ হযরত আবূ বাক্‌র সিদ্দীক্ব,‘উমার,‘উছমান, ‘আলী, ইব্‌নে মাস’ঊদ (রদ্বিয়াল্ল-হু ‘আনহুম আজ্‌মা’য়ীন) প্রমুখ সা’হাবাগণ এ সম্বন্ধে অভিমত পোষণ করেন যে, এগুলো আল্লাহ্ তা‘আলার রহস্যজনিত বিষয় এবং  তাঁর পক্ষ থেকেই অবতীর্ণ। এ বিশ্বাস রেখে এগুলোর তিলাওয়াত করতে-

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
সব বিভাগ